ড্রাইভিং লাইসেন্স কি এটা মনে হয় আমরা মোটামুটি সকলেই জানি। তবে ড্রাইভিং লাইসেন্স হচ্ছে মূলত মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ অনুযায়ী সড়কে বা সর্ব সাধারণের ব্যবহার্য জায়গায় গাড়ি চালানোর অনুমতি পত্র বা কার্ড। অথাৎ এই কার্ড এর মাধ্যমেই একজন ব্যক্তি সড়কে বা সর্ব সাধারণের ব্যবহার্য জায়গায় গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়ে থাকে। তবে এই লাইসেন্স না থাকলে যে গাড়ি চালানো যাবে না এই নজির বাংলাদেশ এ খুব কমই চোখে পড়ে। আবার লাইসেন্স বিহীন ভাবে গাড়ি চালাতে অনেকেই কেস খেয়েছেন এমন নজির ও কম নেই।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে
ড্রাইভং লাইসেন্স করতে প্রথমেই আপনার প্রয়োজন হবে লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স।এই লার্নার সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে দেওয়া হয়ে থাকে। তবে প্রতিটি বিভাগ, জেলা, উপজেলায় বিশেষ করে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে এটি পেতে পারেন। তবে বেশ কিছু শত্য রয়েছে এটার জন্য। প্রথমত আপনাকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য নূন্যতম বয়স ২০ বছর হতে হবে। তবে অপেশাদার হিসেবে ১৮ বছর হলেই হবে।
লার্নার এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি:
- প্রথমত আপনার প্রয়োজনীয় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্ধারিত আবেদন ফরম।
- রেজিষ্ট্রার ডাক্তার কর্তৃক আপনার ফিট মেডিকেল সার্টিফিকেট।
- জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধর এর সত্যায়িত কপি অথবা স্ক্যান কপি।
- কয়েক কপি পাসপোর্ট সাইজের সদস্য তোলা রঙ্গিন ছবি।
- প্রয়োজনীয় ব্যাংক ড্রাফট (ক্যাটাগরি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়)।
উক্ত কাগজপত্রাদি জমা প্রদান করে আপনি স্থানীয় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার হতেও লার্নার কার্ড গ্রহণ করতে পারেন। আপনি যদি লার্নার পেয়ে থাকেন তাহলে এবার আপনাকে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সহ বিআরটি অফিস বরাবর নির্ধারিত ফরম এ আবেদন করতে হবে। এরপর আপনাকে লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় পাস করতে হবে। তবেই আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স হাতে পেয়ে যাবেন।
ধরুণ আপনি ভোটার হওয়ার আগেই অথাৎ জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করার আগেই আপনার পূর্বে জন্ম নিবন্ধন দিয়েই ড্রাইভিং লাইসেন্স করে ফেলেছেন। এখন এসে দেখতে পাচ্ছেন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কোন তথ্যের গড়মিল হয়ে গেছে। তাহলে আপনি এবার কি করবেন। হ্যা আমরা এই কনটেন্ট এর মাধ্যমে আপনাকে সেটাই জানাতে চলেছি।
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর তথ্য সংশোধন করবেন যেভাবে:
- সাদা কাগজে রেজিস্টারিং অথরিটি বরাবর আবেদন।
- ফি জমা রশিদ
- চাহিত সংশোধনির বিপরীতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি।
সাদা কাগজে রেজিস্টারিং অথরিটি বরাবর আবেদন:
আপনার যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কার্ডে ভুল হয়ে থাকে তাহলে আপনি ভাববেন না যে আপনি এটা আর সংশোধন করতে পারবেন না। ভুল সংশোধন এর ব্যবস্থা আছে। তবে একটু সময় প্রয়োজন। আপনি চাইলেই হুট করে সংশোধন করে হাতে পাবেন না। এখন আসি সাদা কাগজে রেজিস্টিারিং অথরিটি বরাবর আবেদন। এই আবেদনটা আবার কি। এটাই হচ্ছে মূল জিনিস। আপনার যে বিষয়টি ভুল হয়েছে এবং সেটি কেন হয়েছে তার বিস্তারিত লিখে একটি আবেদন পত্র। ধরুন সালাম নামক ব্যক্তির নিজের পিতার নাম ও নিজের জন্ম তারিখ ভুল হয়েছে। তাহলে েএকটি নমুনা দরখাস্ত লেখা হলো-
অতএব, মহোদয় সমীপে প্রার্থনা উপরোক্ত বিষয়টি আপনার আমলে নিয়ে আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ভুল লিপিবদ্ধ তথ্য সংশোধনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আপনার সদয় মর্জি হয়।
বিনীত নিবেদক
(মোঃ আব্দুস সালাম)
পিতা: মোঃ ছবের আলী
সেগুন বাগিচা, ঢাকা।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নং-
মোবাইল নং-
ফি জমা রশিদ:
উপরোক্ত দরখাস্তটি লেখা হয়ে গেলে এবার আপনি প্রয়োজনীয় ব্যাংক ড্রাফট ব্যাংক এ জমা করে রশিদটি সংগ্রহ করুণ। এরপর আপনি আপনার রশিদটি আবেদনের সহিত সংযুক্ত করুণ।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি সংযুক্ত:
উপরোক্ত কার্যক্রম সবগুলো হয়ে গেলে এবার আপনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি আবেদনের সহিত সংযুক্ত করুণ। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি বলতে আপনার আবেদন পত্র, ব্যাংক ড্রাফট এর রশিদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদের কপি, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কপি। অথাৎ আপনার যা যা ভুল হয়েছে তার বিপরীতে যথাযথ প্রমাণক এর কপি। উল্লেখ্য আপনার আবেদন জমোদানের সময় আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি কর্তৃপক্ষ নিয়ে নিতে পারে এবং এর পরিবর্তে আপনাকে একটি অস্থায়ী রশিদ দিতে পারে। সেটি দিয়ে আপনি আপনার সংশোধিত ড্রাইভিং লাইসেন্স না পর্যন্ত সকল কাজ করতে পারবেন।